পাবলিক পরীক্ষার সময় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন
বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দেশের প্রায় বেশির ভাগ কলেজে সম্মান প্রথম বর্ষের বোর্ড পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার সময় হাজার হাজার পরীক্ষার্থী দূর-দূরান্ত থেকে নির্দিষ্ট পরীক্ষা কেন্দ্রে এসে পরীক্ষা দিচ্ছে। এইসব পরীক্ষার্থী দের আসা যাওয়ার জন্য নেই কোন বিশেষ পরিবহন ব্যবস্থা। তাই তাদের অনেককেই নিয়মিত বাস সার্ভিস গুলোতে অন্যান্য সময়ের চাইতে দ্বিগুন-তিনগুন ভীড়ের মাঝে জীবনের ঝুকি নিয়ে বাসে কোনক্রমে ঝুলে ঝুলে অনেক কষ্ট সহ্য করে পরীক্ষার হলে পৌছতে হচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা টা আরুও বেশি মাত্রায় ভয়ংকর।
মধ্যবিত্ত, যাদের সিএনজি ভাড়া করার সামর্থ নেই তাদের এই ভয়ংকর পরিবেশের মধ্য দিয়েই আসতে হচ্ছে দুরের কোন পরীক্ষা কেন্দ্রে। তাছাড়া বর্তমানের সিএনজি চালকরাও যেন মহারাজা সেজে বসে থাকে। যাত্রীদের যেন চালকের ইচ্ছামত তার পছন্দের জায়গায় যেতে হবে। কোন কোন চালক যেতে রাজী হলেও হেঁকে বসে দুইগুন-তিনগুন ভাড়া!! যাত্রীরা তাদের হাতে জিম্মি।
শুধু এই পরীক্ষা ই নয়, দেশে বিভিন্ন সময়ে বেশ অনেকগুলো পাবলিক পরীক্ষা সংঘটিত হয়ে থাকে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা, এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষা ইত্যাদি। এইসব পরীক্ষার সময়ও দেখা যায় অভিন্ন চিত্র।
সাধারনত এই সমস্ত পাবলিক পরীক্ষার সময়ে রাস্তায় সাধারণ সময়ের চাইতে বেশিই ভীড় থাকে কারন এই সময় একই সময়ে হাজার হাজার পরীক্ষার্থী বের হয় বিভিন্ন স্থানে পরীক্ষাকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে। তাদের বেশির ভাগ অংশই যাতায়াতের জন্য বাস ব্যবহার করে থাকে। এমনিতেই দেশের বিশেষ করে ঢাকার বাস গুলোতে উপচে পড়া ভীড় সবসময়ই লেগে থাকে। পরীক্ষার সময় তা আরও বেড়ে যায়। বাসে কোনক্রমে ঝুলে থাকাও দায় হয়ে যায়। অনেক সময় বাসে উঠতে না পেরে অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়। মাঝে মাঝে পরীক্ষা হলে পৌছতেই দেরী হয়ে যায়। তাছাড়া চিরায়ত যানজট সমস্যা তো আছেই।
সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয় মেয়েদের। তারা এমনিতেই ছেলেদের সংগে ধাক্কাধাক্কি করতে যায় না বা তাতে পেরেও উঠেনা। উঠতে পারলেও পড়তে হয় বিভিন্ন ভীষন বিব্রতকর পরিস্থিতে। তাদের জন্য সংরক্ষিত (!) আসনেও পায়না তারা বসার অধিকার। তা থাকে কোন পুরুষরূপী নারী বা প্রতিবন্ধী (নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধী দের জণ্য সংরক্ষিত আসন) যারা মনে করে তারাই একমাত্র সংরক্ষিত আসনের অধিকারী। এমতাবস্থায় কোন মেয়ে পরীক্ষার্থীর জন্য পাবলিক বাসে যাতায়াত করা যে কি পরিমান কষ্টসাধ্য তা কেবল ভূক্তভোগীরাই ভাল বলতে পারবেন।
এভাবে যাতায়াতের জন্য পরীক্ষার্থীদের উপর ক্লান্তি ও মানসিক চাপের সৃষ্টি হয়। যার কারণে পরীক্ষা খারাপ হতে পারে।
এমতাবস্থায় সরকারের উচিত, পাবলিক পরীক্ষার সময় সাময়িক ভাবে বিশেষ কোন পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা। যাতে দূরের পরীক্ষার্থীদের এমন মানসিক ভোগান্তির শিকার না হতে হয়।
আমাদের সরকারের আগামী প্রজন্মের উপর যেন কোন মাথাব্যথাই নেই। তারা কি ধরণের পরিবেশে পড়াশোনা করছে, কি কি সুবিধা পাচ্ছে বা বঞ্চিত হচ্ছে এসব বিষয়ে সরকারের কোন ভ্রুক্ষেপ ই নেই। অথচ এদের মধ্য থেকেই নির্ধারিত হবে আগামীর ভবিষ্যত।
তাদের নিরাপদ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার দায়িত্ব তো সরকারেরই।
0 comments:
Post a Comment